গত ২১/০১/২০২০ তারিখে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাউখালী উপজেলার ঘাগরা ইউনিয়নের জুনুমাছড়া গ্রামে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত আদা ফসলের মাঠ দিবস ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কাউখালী উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ কাজী শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পরিচালক(শস্য) কৃষিবিদ এম,এম,শাহ্ নেয়াজ, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (পিপি) কৃষিবিদ মো: আল মামুন এবং আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ মিস্ত্রী। মাঠ দিবসে উপস্থিত সকলে প্রথমে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষকৃত আদা ক্ষেত সরেজমিনে পরিদর্শণ করেন এবং ফলনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রদর্শণী আদা কৃষক পাহাড়ের ঢালে আধুনিক পদ্ধতিতে আদা চাষে তার ব্যবহৃত প্রযুক্তিসমূহ এবং অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। বিশেষ অতিথি কৃষিবিদ মো: আল মামুন বলেন ইতিপূর্বে পাহাড়ের কৃষকরা অপরিকল্পিতভাবে লম্বালম্বি লাইনে আদা, হলুদ বা আনারস চাষ করত। কিন্তু ভূমিক্ষয় ও ভূমিধ্বসের বিষয়টি বিবেচনা করে বর্তমানে কৃষকদের পাহাড়ের ঢালে সকল ফসল আড়াআড়িভাবে বা কন্টুর পদ্ধতিতে চাষ করার জন্য পরামর্শ ও উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে সকলকে আরো বেশি সচেতন হওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। কৃষিবিদ এম,এম,শাহ্ নেয়াজ বলেন আদা একটি উচ্চমূল্যের ও ঔষধিগুন সম্পন্ন ফসল। আদা চাষে ঝুকি কম, লাভ বেশি এবং পতিত জমিতেও চাষ করা যায়। আদার তেমন কোন রোগ বা পোকা মাকড় পরিলক্ষিত হয় না। তবে কন্দপঁচা বা রাইজোম রট রোগ দমনে বীজ রোপনের পূর্বে অবশ্যই বীজ শোধন করে নেওয়ার জন্য তিনি উপস্থিত কৃষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা বলেন বিগত বছরগুলোতে পাহাড়ে ভূমিধ্বস বেড়ে যাওয়ায় পাহাড়ের ঢালে ফসল চাষে ফসল নির্বাচন এবং ব্যবহৃত প্রযুক্তির উপর গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ দানা জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জণ করলেও ডাল, তেল ও মসলা ফসল উৎপাদনে এখনও অনেক পিছিয়ে আছে। বিদেশ থেকে এসব ফসলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে এবং উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জণে সারা দেশে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মসলার বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প কৃষকদের বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করছে।
তিনি উৎপাদিত আদা বীজের গুনগতমান বজায় রাখতে সঠিকভাবে বীজ সংরক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সভাপতির বক্তব্যে কাজী শফিকুল ইসলাম আদা চাষের প্রযুক্তি সমূহের বিস্তারিত বর্ণনা করেন। স্থানীয় জাতের পাশাপাশি আদার অনুমোদিত উন্নত জাতের আবাদ বাড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। আলোচনা শেষে কৃষি তথ্য সার্ভিসের উদ্যোগে উপস্থিত কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রযুক্তি সম্বলিত বিভিন্ন পোস্টার, স্টিকার ও লিফলেট বিতরণ করা হয়। মাঠদিবসে সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার তাপস বড়–য়া, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ, এলাকার গন্য মান্য ব্যক্তিবর্গ এবং শতাধিক কৃষক কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।